সুপ্রভাত বগুড়া (শিমুল হাসান ,( আদমদীঘি), বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সান্তাহার শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক অটোরাইস মিলসহ ভারীস্থাপনা। ওইসব মিলের বর্জ্য ও দুর্ষিত পানিতে মরে যাচ্ছে স্থানীয় একসময়ের ঐতিহ্যবাহী সব খাল বিলের দেশী প্রজাতির মাছ। এছারাও ওইসব অটোমেটিক রাইস মিলের দূষিত পানির দুর্গন্ধে হুমকির মুখে পরেছে জনস্বাস্থ্য বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা ।
এলাকাবাসীরা জানান, স্থানীয় খারিরপুল এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে বৈশাখি অটোরাইস মিল, কলাবাগান এলাকয় বুশরা মিল, ছাতিয়ানগ্রাম রোডের মৌ, ইছামতি মিল মাছের খাদ্য তৈরীর কারখানাসহ ভারী স্থাপনা নিমার্ন করা হয়। এতে ওইসব মিলগুলোর বর্জ্যে ও দুর্শিত পানি স্থানীয় তিয়রপাড়া খালেও রক্তদহ বিলে পরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলপ্রাণী মরে যাচ্ছে। এছারাও ওইসব অটোমেটিক রাইস মিলের বর্জ্যে ও দুর্শিত পানির দুরর্গন্ধে হুমকির মূখে পরেছে জনস্বাস্থ্য ।
এক সময় আত্রাই, রানীনগর উপজেলার বিলকৃঞ্চনপুর, বদলা,পালশা রাজাপুর গ্রাম, সান্তাহার পার্শ্ববতীর্ প্রত্যন্ত কদমা, করজবাড়ী, আমপুরা, মূর্য়রকাশিমালা গ্রামের মানুষের সান্তাহার জংশন শহরে যাতায়েতের একমাত্র পথছিল তিয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিল। সেসময় এই খাল বিলে পাওয়া যেত প্রচুর পরিমান দেশী প্রজাতির স্বসাধু মাছ। বিলপারের আশপাশ গ্রামের প্রায় শতাধিক জেলে পরিবার এই খাল বিলে, রুই, কাতল, মেগ্রল, বোয়াল, চিতল, মাগুর কানুছ,টেংড়া নুনা,পবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ শিকার করে এলাকার চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি শত শত মন মাছ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর এমনকি রাজধানীতে বিক্রির জন্য নিয়ে যেত।
আগে এই ঐতিহ্যবাহি খাল, বিলে মাছ শিকার করে খেতে কানি—জেঠেবগ,পানকৈর, বালিহাঁস, মাশরাঙ্গা, আচ্চোরাসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি উড়ে এসে পরতোএ সব বিলে। ওইসব পাখির কলোকাকোলিতে মূখরিত হয়ে ওঠতো বিল সমূহ এলাকা। শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত ভাবে অটোরাইস মিলসহ একাধিক ভারি মিলকলকাখানা গড়ে তোলায় এসব মিলের বর্জ্য ও পচা—দুর্শিত পানি সান্তাহার শহরের একমাত্র তিয়রপাড়া খাল ও এলাকার ঐতিহ্যবাহি রক্তদহ বিলে গিয়ে পরে এই খাল ও বিলের মাছ মরে যাচ্ছে।
ফলে এখন ভরামেীসুমেও এই বিশাল রক্তদহ বিল ও খালে স্বসাধু দেশী মাছের দেখা মিলছেনা। ফলে একদিকে বেকার হয়ে পরেছে বিল পারের বোদলা,পালশা, সান্দিড়া, কদমা করোজবাড়ী, কাশিমালা গ্রামের প্রায় শতাধিক জেলে পরিবার। অন্যদিকে মাছ সংকটের মূখে পরছে সান্তাহর জংশন শহর,আদমীঘি উপজেলা সদরসহ ব্যস্ততম ও ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র বগুড়া জেলা এবং উত্তরাঞ্চলের বেশকিছু এলাকা। আবার একই একারনে এই বিশাল বিলটিতে আর কোন অতিথি পাখির দেখা ও মিলেনা।
এছারাও ওইসব অটোমেটিক রাইস মিলের বর্জ্যে ও দুর্শিত পানির দুরগন্ধে হুমকির মূখে পরেছে এলাকার জনস্বাস্থ্য।এলাকাবাসীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদমদীঘি উপজেলা নিবার্হী অফিসার এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ তীয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিল পরিদর্শন কালে তিনি বলেন যেসব মিলের বর্জ্য ও দুর্শিত পানিতে খাল—বিলের মাছ এবং এলাকার জনস্বাস্থ্যের বিঘ্ন ঘটছে সেইসব মিলকে আইনে আওতায় আনা হবে। এবিষয়ে সান্তাহার ইউপির চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন রক্তদহ বিল প্রাচিনতম ঐতিহ্য। এই ঐতিহাসিক বিল এলাকার ইতিহাসের অংশ। কতিপয় স্বার্থন্বেষি ব্যাক্তির কারনে এবং তাদের নির্মিত মিলকরকারখার দুর্ষিত বর্জ্যর পানির কারনে হারিয়ে যাচ্ছে এই বিলের মাছ, সুন্দরয্যে ও ইতিহাস।