সুপ্রভাত বগুড়া (কামরুজ্জামান মোমিন): বগুড়া শহরে দিন দিন খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত নয় দিনে বগুড়া শহরে তিনটি হত্যা সংঘটিত হলো। তিন দিনের ব্যবধানে শহরের একই এলাকায় দুইটি খুনের ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। শহরের আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় এই প্রকাশ্যে খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করছে।
বগুড়া শহরের আকাশ তারা এলাকায় গত শুক্রবার দিনে দুপুরে খুন হন শাকিল নামের এক বালু ব্যবসায়ী। আজ রবিবার আবারও একই এলাকা আকাশতারায় প্রকাশ্যে দিন দুপুরে যুবলীগ নেতা আবু তালেবকে (৩২) গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
আজ রোববার দুপুর দেড়টায় এই খুনের ঘটনা ঘটে। নিহত আবু তালেব (৩২) বগুড়া শহর যুবলীগের সাবগ্রাম বন্দর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের আকাশতারা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, আবু তালেব সাবগ্রাম থেকে চাল কিনে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। আবু তালেব বাড়ির সামনে পৌছিলে একদল দুর্বৃত্ত তার পথ রোধ করে। এরপর রাস্তার পাশে একটি কচুক্ষেতে ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে তারা পালিয়ে যায়।
আকাশতারা এলাকায় দিনের আলোতে এই হত্যাকাণ্ডের সময় বগুড়া-গাবতলী সড়ক দিয়ে অসংখ্য মানুষ ও যানবাহন চলাচল করলেও আতংকে কেউ এগিয়ে আসেনি দুর্বৃত্তদের ধরতে।
নিহত আবু তালেবের বগুড়া শহরের হকার্স মার্কেটে ব্যাগের দোকান ছিল। এছাড়া তিনি এলাকায় বালুর ব্যবসা করতেন বলেও জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে নিহত আবু তালেবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুবলীগ নেতা মানিক খুন হন। সে সময় আবু তালেব মানিক হত্যা মামলার আসামি আল আমিন নামের এক যুবককে ধরে মারপিট করে পা ভেঙে দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।
সেই আল আমিন ও তার সহযোগী রাফি শুক্রবারে সংঘটিত শাকিল হত্যা মামলার আসামি হয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। আল আমিনের সহযোগী রাফিও ছিল যুবলীগ নেতা মানিক হত্যা মামলার আসামি।
তবে আবু তালেবকে হত্যার পেছনে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী এবং পুলিশও বলতে পারছে না। আবু তালেব হত্যাকাণ্ডের পর বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল করিম জানান, ‘হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। পর পর একই এলাকায় প্রকাশ্যে দিবালোকে এই ধরনের খুনের কারনে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
বগুড়া শহরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় এমন খুনের ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী মনে করেন। এর আগে গত ৫ জুন শুক্রবার শহরের শাকপালা এলাকায় মসজিদের সামনে বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ মিস্টারকে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রকাশ্যে হত্যা করে।