ইসরাইলি বাহিনী গাজায় প্রবেশ করলে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়বে : হামাস

62
ইসরাইলি বাহিনী গাজায় প্রবেশ করলে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়বে : হামাস

এমন একটি শহর গাজা। যা দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইয়ের ধারা অবরুদ্ধ। বর্তমানে সেখানে পানি, বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ। তেলের অভাবে বির্দুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাস এই গাজা শহরে। বর্তমানে সেখানে এক ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কারণ দখলদার ইসরাইলী বাহিনীর টাকা বোমা বর্ষণে গাজার অধিকাংশ এলাকা ধ্বংস্ত স্তূপে পরিণত হয়েছে। লাগাতার হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১২০০ বেশি মানুষ মারা গেছে।

এদিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তিন লাখের বেশি সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে ইসরাইল। ফলে অনেকেই মনে করছেন যে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় প্রবেশ করবে। এছাড়া শনিবার থেকে গাজায় তারা বিরামহীনভাবে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করেছে। উপত্যকাটিতে খাবার, পানি, জ্বালানিসহ সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে। একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পুরো উপত্যকায় অন্ধকার নেমে এসেছে। হাসপাতালে জেনারেটর চালিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু সেটাও দুই-এক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

Pop Ads

দৃশ্যত, গাজাবাসীকে পুরোপুরি অসহায় অবস্থায় ফেলে স্থল হামলা চালাতে যাচ্ছে ইসরাইল। হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার অন্য মন্ত্রীরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ পাশ্চাত্য দুনিয়া এ কাজে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইসরাইলি ভাষ্যকেই তারা পুরোপুরি সত্য হিসেবে গ্রহণ করার কথা ঘোষণা করেছে। ফলে পুরো গাজাকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেও কোনো সমালোচনা হবে না।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। গাজায় ইসরাইলি স্থল হামলা সহজ হবে না। তাদের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি সৃষ্টি করবে বলে তাদের অভিমত।

ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সের গোয়েন্দা শাখার সাবেক সদস্য এবং বর্তমানে ঝুঁকি মূল্যায়নকারী কোম্পানি সিবিলাইনের মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক নোয়াম ওস্টফেল্ডও জানিয়েছেন, গাজায় প্রবেশ করলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে ইসরাইলি বাহিনী।

তিনি বিবিসিকে বলেন, মনে হচ্ছে যে ইসরাইল হামাসের ব্যবহার করা ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলোকে টার্গেট করতে চাচ্ছে। কিন্তু তিনি এ কাজকে ‌’চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এগুলো খুবই সুরক্ষিত, এগুলো খুবই সংকীর্ণ। অনেক স্থানে আলো একেবারেই কম বা অনেক স্থানে আলো নেই একেবারেই।’

তিনি আরো বলেন, আরেকটি বিকল্প হলো ‘কমান্ডো বাহিনী’ পাঠিয়ে আটক শতাধিক বন্দীকে মুক্তি করে আনা।

নোয়াম ওস্টফেল্ড বলেন, ‘সাধারণভাবে এই ভূখণ্ডে লড়াই করা খুবই কঠিন।’

তিনি বলেন, ‘গাজা খুবই ঘন বসতিপূর্ণ নগর এলাকা। গাজায় যেকোনো ধরনের স্থলবাহিনীর প্রবেশ হবে খুবই চ্যালেঞ্জিং কাজ। আর এত সম্ভবত উভয় পক্ষের ব্যাপক হতাহত হবে।’

শনিবার ইসরাইলে অভিযানের সময় প্রায় ১৫০ জনকে বন্দী করে হামাস।

এরপর থেকে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইলি হামলায় গাজায় হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫,০০০। আর হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছে ১২ শ’ লোক। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশী রয়েছে।

ইসরাইল পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করেছে গাজায়। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ কিছুই প্রবেশ করতে পারছে না উপত্যকায়। একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্রটিও জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।